মৃত্যুর রহস্য উন্মোচনের মুখে নিখোঁজ সামিরা, ডন কোথায়!

মৃত্যুর রহস্য উন্মোচনের মুখে নিখোঁজ সামিরা, ডন কোথায়!

ঢালিউডের কিংবদন্তি নায়ক সালমান শাহর মৃত্যুর ২৯ বছর পর আদালত অবশেষে হত্যার মামলা পরিচালনার নির্দেশ দিয়েছেন। ঢাকা শহরের ষষ্ঠ অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ জান্নাতুল ফেরদৌস ইবনে হক এই আদেশ দিয়েছেন। মামলাটি বর্তমানে রমনা থানায় তদন্তের জন্য প্রেরণ করা হয়েছে।

সালমান শাহ ১৯৯৬ সালের ৬ সেপ্টেম্বর মৃত্যুবরণ করেন। দীর্ঘ সময় ধরে মৃত্যুর প্রকৃত কারণ নিয়ে নানা জল্পনা চললেও কার্যকর কোনো তদন্ত করা হয়নি। নতুন আদেশের পর সালমান শাহর মামা আলমগীর কুমকুম রমনা থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলায় সাবেক স্ত্রী সামিরা হক, খল অভিনেতা ডন হকসহ মোট ১১ জনকে আসামি করা হয়েছে।

সালমানের পরিবার বরাবরই দাবি করেছেন, নায়ককে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। মা নীলা চৌধুরীর অভিযোগ ছিল, হত্যার মামলা করতে গেলে পুলিশ সেটিকে প্রথমে অপমৃত্যুর মামলা হিসেবে নথিভুক্ত করেছিল। পুলিশ জানিয়েছিল, “যদি তদন্তের সময় হত্যা প্রমাণিত হয়, তাহলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে মামলা হত্যা মামলায় রূপান্তরিত হবে।”

সালমান শাহর মৃত্যুর পর থেকেই তাঁর পরিবারের অভিযোগের নিশানা ছিলেন তাঁর স্ত্রী সামিরা। তবে সামিরা বরাবরই মৃত্যুকে আত্মহত্যা বলে দাবি করেছেন। এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছেন, সালমান মানসিকভাবে ‘সুইসাইডাল বাই নেচার’ ছিলেন এবং এর আগে তিনবার আত্মহত্যার চেষ্টা করেছিলেন। তিনি যুক্তি দেখিয়েছেন, এসব ঘটনার মধ্যে দুটি মেডিকেল রেকর্ডে রয়েছে এবং একটি অন্য হাসপাতালে ঘটেছিল—সবই তাঁর বিয়ের আগে।

নতুন মামলার নির্দেশের পর সামিরা চার দিন ধরে নিখোঁজ রয়েছেন। তিনি যে ফোন নম্বর ব্যবহার করতেন, তা বন্ধ পাওয়া যাচ্ছে। একইভাবে অভিযুক্ত ডন হকও যোগাযোগের চেষ্টা সত্ত্বেও সাড়া দিচ্ছেন না।

সালমান শাহ নব্বইয়ের দশকের শুরুতে ঢালিউডে অভিষেক ঘটে এবং মাত্র চার বছরের চলচ্চিত্রজীবনে ২৭টি ছবিতে অভিনয় করে তুমুল জনপ্রিয়তা অর্জন করেন। দর্শক ও সমালোচকদের কাছে তিনি ছিলেন উজ্জ্বল নক্ষত্র। ২৯ বছর পরও তাঁর নাম অমর হয়ে রয়েছে। আদালতের নির্দেশ ও মামলার পুনরুজ্জীবনের খবরে ভক্তদের মধ্যে উত্তেজনা ও আশার অনুভূতি দেখা দিয়েছে।

প্রত্যক্ষদর্শীর বরাতে জানা গেছে, ১৯৯৬ সালের ৫ সেপ্টেম্বর ‘প্রেম পিয়াসী’ ছবির ডাবিং চলাকালীন সালমান ও নায়িকা শাবনূরের মধ্যে খুনসুটি হয়। সামিরা ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি বুঝে গাড়িতে ওঠেন। পরে সালমান ও পরিচালক বাদল খন্দকার তাঁকে ফ্ল্যাটে পৌঁছে দেন। শেষের দিকে সালমান মানসিক চাপের মধ্যে ছিলেন। পরিবারের সঙ্গে সম্পর্কের জটিলতা এবং প্রযোজকদের সঙ্গে বোঝাপড়ার ঘাটতি তাঁকে মানসিকভাবে দমিয়ে রেখেছিল।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *