যে ৫টি ভয়ংকর পেটের ক্যান্সার দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে! - bdmorning24news

যে ৫টি ভয়ংকর পেটের ক্যান্সার দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে!

পেটের ক্যান্সার শুনলেই অনেকের মনে হয় এটি কোনো সাধারণ রোগ, যা সহজেই চিহ্নিত করা যায়। কিন্তু বাস্তবতা সম্পূর্ণ ভিন্ন। পেটের ক্যান্সারের ধরন, বৃদ্ধি ও উপসর্গ অন্যান্য ক্যান্সারের তুলনায় আলাদা, এবং কিছু ক্যান্সার অতি দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। চিকিৎসা বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কিছু বিরল কিন্তু আক্রমণাত্মক ক্যান্সার রয়েছে, যা দ্রুত বৃদ্ধি পায় এবং প্রাণঘাতী ঝুঁকি তৈরি করে।

অ্যাডেনোকার্সিনোমা: সবচেয়ে বেশি দেখা যায়
পেটের ক্যান্সারের প্রায় ৯০ থেকে ৯৫ শতাংশই অ্যাডেনোকার্সিনোমা। এটি পাকস্থলীর শ্লেষ্মা ও হজমরস উৎপাদনকারী কোষ থেকে উদ্ভূত হয়। অ্যাডেনোকার্সিনোমার দুটি ধরন রয়েছে:

ইনটেস্টাইনাল অ্যাডেনোকার্সিনোমা ধীরে বৃদ্ধি পায় এবং হেলিকোব্যাক্টর পাইলোরি সংক্রমণের সঙ্গে সম্পর্কিত।

ডিফিউজ অ্যাডেনোকার্সিনোমা দ্রুত ও অনিয়মিতভাবে ছড়িয়ে পড়ে, যা তরুণরাও আক্রান্ত হতে পারে।
প্রধান উপসর্গ: অল্প খাবার খেয়ে পেট ভরা, হজমে সমস্যা, বমি বমি ভাব, ক্ষুধামন্দা ও অজানা ওজন হ্রাস।

পাকস্থলীর লিম্ফোমা: ইমিউন সিস্টেমে আঘাত
লিম্ফোমা সাধারণত লিম্ফ নোডে হলেও পাকস্থলীতেও শুরু হতে পারে। এটি প্রাথমিক পর্যায়ে ধরা পড়লে চিকিৎসাযোগ্য।

এমএএলটি লিম্ফোমা ধীরে বাড়ে এবং এক জায়গাতেই সীমাবদ্ধ থাকে।

ডিফিউজ লার্জ বি-সেল লিম্ফোমা গুরুতর ও দ্রুত চিকিৎসা প্রয়োজন।
উপসর্গ: বারবার পেটব্যথা, ক্ষুধামন্দা, ওজন হ্রাস, বুকজ্বলা ও বমি।

জিআইএসটি: বিরল কিন্তু মারাত্মক
গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনাল স্ট্রোমাল টিউমার (জিআইএসটি) পাকস্থলীর দেয়ালের স্নায়ুকোষ থেকে উদ্ভূত হয়। প্রাথমিক সময়ে উপসর্গ নেই, কিন্তু বড় হলে পেটে ব্যথা, রক্তমিশ্রিত মল, অবসাদ ও ওজন কমে যাওয়া দেখা যায়। লক্ষ্যভিত্তিক ওষুধ ও অস্ত্রোপচার কার্যকর।

কারসিনয়েড টিউমার: নীরব ঘাতক
প্রাথমিকভাবে উপসর্গহীন, তবে পরবর্তী সময়ে পেটের ক্র্যাম্প, মলত্যাগের পরিবর্তন, ত্বক লাল হওয়া, ডায়রিয়া, ওজন হ্রাস ও বমি হতে পারে। ছোট টিউমার এন্ডোস্কোপিক অস্ত্রোপচারে সরানো যায়, বড় বা ছড়িয়ে পড়া ক্ষেত্রে কেমোথেরাপি ও বিশেষ চিকিৎসা প্রয়োজন।

স্কোয়ামাস সেল কার্সিনোমা: বিরল ও আক্রমণাত্মক
পেটের সবচেয়ে বিরল ক্যান্সার। পাকস্থলীতে গ্রন্থিযুক্ত কোষে আলসার ও অ্যাসিড রিফ্লাক্সের কারণে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সৃষ্টি হয়। উপসর্গ: বারবার পেটব্যথা, রক্তস্বল্পতা ও অকারণে ওজন হ্রাস। চিকিৎসায় বড় অস্ত্রোপচার ও কেমোথেরাপি প্রয়োজন।

পেটের ক্যান্সার একটি জটিল রোগ। সব ধরনের ক্যান্সারের বৃদ্ধি ও চিকিৎসা পদ্ধতি ভিন্ন। কিছু ধীরে বাড়ে, আবার কিছু হঠাৎ ভয়াবহ আকার নেয়। তাই অল্প উপসর্গ দেখলেই দেরি না করে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি। সময়মতো শনাক্ত ও চিকিৎসা করলে জীবন রক্ষার সম্ভাবনা অনেক বৃদ্ধি পায়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *