জাতীয় বেতন কমিশন সরকারি চাকরিজীবীদের বেতন ৯০ থেকে ৯৭ শতাংশ পর্যন্ত বাড়ানোর সুপারিশ করেছে। গত ২৭ জুলাই গঠিত এ কমিশন ইতোমধ্যে তাদের খসড়া প্রতিবেদন চূড়ান্ত করেছে এবং ডিসেম্বরের মধ্যেই চূড়ান্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে।
সূত্র অনুযায়ী, আগামী ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগেই নতুন বেতন কাঠামো কার্যকর হতে পারে। নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে পারে ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে, তাই ধারণা করা হচ্ছে ২০২৬ সালের জানুয়ারি থেকেই সরকারি চাকরিজীবীরা নতুন স্কেলে বেতন-ভাতা পাবেন।
খসড়া প্রস্তাব অনুযায়ী, বিভিন্ন গ্রেডে প্রস্তাবিত মূল বেতন দাঁড়াচ্ছে—গ্রেড-১ এ ১,৫০,৫৯৪ টাকা, গ্রেড-২ এ ১,২৭,৪২৬ টাকা, গ্রেড-৩ এ ১,০৯,০৮৪ টাকা, গ্রেড-৪ এ ৯৬,৫৩৪ টাকা এবং গ্রেড-৫ এ ৮৩,০২০ টাকা। মধ্য ও নিম্ন গ্রেডের ক্ষেত্রেও উল্লেখযোগ্য বৃদ্ধি প্রস্তাব করা হয়েছে; যেমন গ্রেড-১০ এ ৩০,৮৯১ টাকা, গ্রেড-১৫ এ ১৮,৭২৮ টাকা এবং সর্বনিম্ন গ্রেড-২০ এ ১৫,৯২৮ টাকা।
নতুন কাঠামোর মূল বৈশিষ্ট্য হলো এটি হবে ‘সাকুল্য বেতন’ বা ‘পারিশ্রমিক’ ভিত্তিক, যেখানে কোনো ধরনের আলাদা ভাতা বা অতিরিক্ত সুবিধা থাকবে না। বিদ্যমান সব ভাতা তুলে দিয়ে একক বেতন কাঠামো চালুর প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। আন্তর্জাতিকভাবে উন্নত ও উন্নয়নশীল অনেক দেশেই এমন কাঠামো প্রচলিত। এ প্রস্তাব বাস্তবায়িত হলে সভা, সেমিনার, প্রশিক্ষণ বা কমিটির কাজে অংশগ্রহণের সম্মানী ও ভাতার মতো অতিরিক্ত সুবিধা বাতিল হবে। এসব খাতে প্রতিবছর প্রায় এক হাজার কোটি টাকা ব্যয় হয়, যা কমিশনের মতে নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য নয়।
অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ জানিয়েছেন, পে-কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়নের জন্য প্রয়োজনীয় অতিরিক্ত অর্থ সংশোধিত বাজেটে বরাদ্দ রাখা হবে। ডিসেম্বর থেকে বাজেট সংশোধনের কাজ শুরু হবে এবং গেজেট প্রকাশের পরই নতুন বেতন কাঠামো কার্যকর হবে। সবকিছু পরিকল্পনামাফিক এগোলে, ২০২৬ সালের শুরু থেকেই সরকারি চাকরিজীবীরা ৯০ থেকে ৯৭ শতাংশ পর্যন্ত বেতন বৃদ্ধির সুফল ভোগ করতে পারবেন।
