দীর্ঘ ১০ বছরের অপেক্ষার পর পে কমিশন, দুই পে স্কেলের সমান বেতন বাড়বে? - bdmorning24news

দীর্ঘ ১০ বছরের অপেক্ষার পর পে কমিশন, দুই পে স্কেলের সমান বেতন বাড়বে?

ইতিহাসে সর্বাধিক সময়ের ব্যবধানে, প্রায় এক দশক পরে নতুন পে কমিশন গঠিত হয়েছে। এই কমিশনের সুপারিশের ভিত্তিতে ঘোষিত হবে নবম পে স্কেল, যা সরকারি চাকুরিজীবীদের সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধি করবে।

২০২৫ সালের পে কমিশন গঠনের এই সময়ে কর্মজীবীদের নজর এখন বেতন বৃদ্ধির পাশাপাশি গ্রেড ভেঙে বেতনের অনুপাত কমিয়ে বৈষম্য দূর করার দিকে।

বাংলাদেশের ইতিহাসে আটটি পে স্কেল কার্যকর হয়েছে। পর্যালোচনায় দেখা গেছে, সর্বোচ্চ ব্যবধান ৮ বছরে দুইবার পে স্কেল ঘোষণা হয়েছে। ১৯৮৫ সালে সর্বোচ্চ বেতন দ্বিগুণ করে ৬ হাজার টাকা এবং সর্বনিম্ন বেতন ১২২.২ শতাংশ বাড়িয়ে ৫০০ টাকা করা হয়েছিল। ২০০৫ সালে সর্বোচ্চ বেতন ৫৩.৩৩ শতাংশ বাড়িয়ে ২৩ হাজার টাকা এবং সর্বনিম্ন বেতন ৬০ শতাংশ বাড়িয়ে ২,৪০০ টাকা করা হয়।

ছয় বছরের ব্যবধানে গঠিত কমিশনও ছিল। ১৯৯১ সালে সর্বোচ্চ বেতন ৬৬.৬৬ শতাংশ বাড়িয়ে ১০ হাজার এবং সর্বনিম্ন বেতন ৮০ শতাংশ বাড়িয়ে ৯০০ টাকা করা হয়েছিল। ২০১৫ সালে সর্বোচ্চ বেতন ৯৫ শতাংশ বাড়িয়ে ৭৮ হাজার টাকা এবং সর্বনিম্ন বেতন ১০১.২২ শতাংশ বাড়িয়ে ৮,২৫০ টাকা করা হয়েছিল।

পাঁচ বছরের ব্যবধানে ১৯৯৭ সালে গঠিত কমিশন সর্বোচ্চ বেতন ৫০ শতাংশ বাড়িয়ে ১৫ হাজার টাকা এবং সর্বনিম্ন বেতন ৬৬.৬৬ শতাংশ বাড়িয়ে ১,৫০০ টাকা করা হয়। ইতিহাসে সর্বনিম্ন ব্যবধান (৪ বছর) ছিল ১৯৭৭ সালে, যেখানে সর্বোচ্চ বেতন ৫০ শতাংশ বাড়িয়ে ৩,০০০ টাকা এবং সর্বনিম্ন বেতন ৭৩ শতাংশ বাড়িয়ে ২২৫ টাকা করা হয়েছিল।

৪৪ বছরে সরকারি কর্মজীবীরা গড়ে ৫.৫ বছরের ব্যবধানে একটি পে স্কেল পেয়েছেন। ইতোমধ্যে অর্থ উপদেষ্টা জানিয়েছেন, আগামী ২০২৬ সালে নতুন স্কেল ঘোষণা হবে। কর্মজীবীরা মনে করছেন, ১১ বছরে অন্তত দুটি স্কেল ঘোষিত হওয়া উচিত ছিল।

পে কমিশন-২০২৫-এর একজন সদস্য বলেছেন, ‘সুপারিশ করার ক্ষেত্রে সক্ষমতাও বিবেচনা করবে কমিশন। আমরা অনেকগুলো প্রশ্ন দিয়েছি মতামতের জন্য। চার ক্যাটাগরিতে প্রশ্নের উত্তর ইতোমধ্যে আসছে। মিটিংয়ে আমরা উত্তরগুলো পর্যালোচনা করবো। পরে চিন্তাভাবনা করে সিদ্ধান্ত নেবো।’

১১-২০তম গ্রেড সরকারী চাকরিজীবি ফোরামের সাংগঠনিক সম্পাদক মো. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘২০১৫ সালের পর অন্তত দুটি কমিশন গঠিত হলে, দুইবার বেতন বাড়তো।

এই বিবেচনায় যেহেতু দুইবারের সময়ে একবার পে স্কেল দেয়া হচ্ছে, তাই বেতন অন্তত ১৫০% বৃদ্ধি করা হোক। এছাড়া বাজার দরের সঙ্গে মিল রেখে গ্রেড ভেঙে বেতনের অনুপাত কমিয়ে বৈষম্য দূর করতে হবে। মূল বেতনের ক্ষেত্রে সর্বনিম্ন ৩২ হাজার এবং সর্বোচ্চ এক লাখ ২৮ হাজার টাকা হওয়া উচিত।’

পে কমিশনের অন্য সদস্যও ইঙ্গিত দিয়েছেন, নতুন স্কেলে মূল বেতন দ্বিগুণ হতে পারে। সেক্ষেত্রে ১ম গ্রেডের সর্বোচ্চ মূল বেতন দাঁড়াবে ১,৫৬,০০০ টাকা এবং ২০তম গ্রেডের সর্বনিম্ন মূল বেতন হবে ১৬,৫০০ টাকা। গ্রেড ভেঙে কমালে সর্বনিম্ন গ্রেডের মূল বেতন আরও বাড়তে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *