দিল্লিতে ছেলেকে জড়িয়ে ধরে কাঁদলেন ‘শেখ হাসিনা’

ছাত্রজনতার গণঅভ্যুত্থানের মুখে গত বছরের ৫ আগস্ট দেশ ছেড়ে ভারতে আশ্রয় নেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা। এরপর থেকে দীর্ঘ ১০ মাস ধরে তিনি অবস্থান করছেন ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লির একটি সেফ হোমে, যেখানে মোদি প্রশাসনের সরাসরি নিরাপত্তা ব্যবস্থার মধ্যে রাখা হয়েছে তাঁকে।

নানা সূত্রের তথ্য অনুযায়ী, শেখ হাসিনার বর্তমান বাসস্থান একটি কড়া নিরাপত্তাবেষ্টিত বাড়ি, যা ‘সেফ হোম’ নামে পরিচিত। সেখানে রয়েছেন কেবল তাঁর কন্যা সায়মা ওয়াজেদ পুতুল। দীর্ঘ রাজনৈতিক শাসন শেষে এমন নির্জন অবস্থানেই গত রমজান ও কোরবানির ঈদ পালন করেছেন তিনি।

তবে এবারের কোরবানির ঈদ ছিল কিছুটা ব্যতিক্রম। দীর্ঘদিন পর তাঁর একমাত্র পুত্র সজীব ওয়াজেদ জয় যুক্তরাষ্ট্রের ভার্জিনিয়া থেকে গোপনে দিল্লিতে এসে মায়ের সঙ্গে ঈদ উদযাপন করেন। ভারতীয় গণমাধ্যম এই সময় এক প্রতিবেদনে জানায়, জয় শুক্রবার রাতে দিল্লিতে পৌঁছান এবং পরদিন ঈদুল আজহা উদযাপন শেষে যুক্তরাষ্ট্রে ফিরে যান।

প্রতিবেদনে বলা হয়, জয়ের আকস্মিক দিল্লি সফরের বিষয়টি ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর নজরে ছিল না। ধারণা করা হচ্ছে, সফরটি অত্যন্ত গোপনীয় ও পারিবারিক হওয়ায় মোদি প্রশাসনের বিশেষ ব্যবস্থায় তা সম্পন্ন হয়। সফর নিয়ে মন্তব্য করতে রাজি হননি জয়ের ঘনিষ্ঠ কোনো ব্যক্তি বা সফরসঙ্গী।

দিল্লিতে গোপন সাক্ষাৎকারে জয়কে জড়িয়ে ধরে কাঁদলেন শেখ হাসিনাঈদের দিন শেখ হাসিনা নিজেই রান্নাঘরে গিয়ে ছেলের প্রিয় খাবার রান্না করেন। মোরগ পোলাও, মাছ, সবজি ও ডাল ছিল সেই দিনের বিশেষ আয়োজনে। আবেগঘন মুহূর্তে মায়ের হাতে রান্না করা খাবার খেয়ে সন্তুষ্ট জয় মাকে আলিঙ্গন করেন, এমন দৃশ্যের বর্ণনা দেন শেখ পরিবারের ঘনিষ্ঠ একটি সূত্র।

প্রতিবেদনে আরও উল্লেখ করা হয়, গত রমজান ঈদে দিল্লিতে আসতে না পারলেও, শেখ হাসিনা নিজ হাতে রান্না করা মোরগ পোলাও যুক্তরাষ্ট্রে পাঠিয়েছিলেন জয়ের জন্য। এ যেন ছিল এক অন্যরকম মাতৃস্নেহের বহিঃপ্রকাশ।

এদিকে, আওয়ামী লীগের একাধিক শীর্ষ নেতা জানিয়েছেন, চলতি বছরের জুন মাসের শেষ দিকে শেখ হাসিনার সঙ্গে জয়ের পুনরায় দেখা হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনের পর এমন একান্ত পারিবারিক মুহূর্তে শেখ হাসিনা যে আবেগাপ্লুত হয়েছেন, তা এই সফরের বিবরণ থেকেই স্পষ্ট। তবে কবে নাগাদ তিনি আবার রাজনৈতিক ময়দানে ফিরবেন, তা এখনও অনিশ্চিত।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *