অল্প কিছু পরিবর্তনই বলে দিতে পারে, শরীরে নীরবে ছড়িয়ে পড়ছে ক্যান্সারের মতো মরণব্যাধি। কিন্তু বাস্তবে আমরা অনেক সময় সেই ছোট্ট সতর্কবার্তাগুলোকে অবহেলা করি।ভেবে নিই, হয়তো সামান্য ক্লান্তি বা রুটিনের গোলমাল।
অথচ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, প্রাথমিক পর্যায়ে কিছু নির্দিষ্ট লক্ষণ চিনে ফেলতে পারলেই ক্যান্সার প্রতিরোধ ও চিকিৎসায় মিলতে পারে অমূল্য সময়ের সুবিধা।
বিশ্বখ্যাত আমেরিকান ক্যান্সার সোসাইটি এবং ন্যাশনাল ক্যান্সার ইনস্টিটিউটের গবেষণা অনুসারে, নিচের উপসর্গগুলো কখনোই হালকাভাবে নেওয়া উচিত নয়। শরীরের নীরব সংকেতগুলোকে বুঝে নেওয়াটাই সবচেয়ে বড় সচেতনতা।
১. কারণ ছাড়াই ওজন কমছে? সতর্ক হোন
ডায়েট বা ব্যায়ামের কোনো পরিবর্তন না করেই যদি হঠাৎ ওজন কমতে থাকে, সেটি হতে পারে ক্যান্সারের প্রথম সতর্কসংকেত। বিশেষ করে পাকস্থলি, অগ্ন্যাশয়, খাদ্যনালী বা ফুসফুসের ক্যান্সারে এমনটি সাধারণত দেখা যায়। ছয় মাসে যদি ৫ কেজির বেশি ওজন হ্রাস পায়, বিষয়টিকে গুরুত্ব দিন।
২. বিশ্রামেও ক্লান্তি কাটছে না
নিয়মিত ঘুমের পরও যদি সারাদিন ক্লান্তি ঘিরে রাখে, তাহলে এটি রক্তের ক্যান্সার (লিউকেমিয়া) বা রক্তাল্পতার ইঙ্গিত হতে পারে। বিশেষজ্ঞদের মতে, দীর্ঘস্থায়ী ক্লান্তিকে অবহেলা করা বিপজ্জনক।
৩. ত্বকের রঙ বা তিলে পরিবর্তন?
ত্বকে নতুন তিল, আকারে বৃদ্ধি, বা রঙে অস্বাভাবিক পরিবর্তন দেখা দিলে তা হতে পারে ত্বকের ক্যান্সার মেলানোমার পূর্বলক্ষণ। কোনো তিল যদি রুক্ষ, অনিয়মিত বা চুলকানি তৈরি করে, দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
৪. অস্বাভাবিক রক্তপাত বা রক্তক্ষরণ
প্রজনন বয়স পেরিয়ে যাওয়া নারীদের হঠাৎ রক্তপাত, প্রস্রাব বা মলের সঙ্গে রক্ত আসা, কিংবা দাঁত ব্রাশে অজানা রক্তপাত—এসবই হতে পারে জরায়ু, কোলন, মূত্রাশয় বা মুখের ক্যান্সারের প্রাথমিক লক্ষণ। সময়মতো পরীক্ষা করানোই একমাত্র সুরক্ষা।
৫. শরীরে গাঁঠ বা ফোলাভাব অনুভব করছেন?
গলা, বগল, ঘাড় বা স্তনের আশেপাশে হঠাৎ কোনো গাঁঠ বা ফোলাভাব দেখা দিলে বিষয়টিকে অবহেলা করবেন না। অনেক সময় এ ধরনের পরিবর্তনই হতে পারে টিউমার বা ক্যান্সারের প্রাথমিক বার্তা। যত দ্রুত সম্ভব চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি।
শরীর প্রতিদিনই আমাদের সঙ্গে কথা বলে, শুধু তার ভাষাটা বুঝে নিতে হয়। ক্যান্সার যদি প্রাথমিক পর্যায়ে শনাক্ত করা যায়, নিয়ন্ত্রণ ও নিরাময়—দুটিই সম্ভব। তাই যে কোনো অস্বাভাবিক পরিবর্তন দেখলেই অবহেলা নয়, সচেতন হোন। নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা করুন, কারণ একটু সতর্কতাই বাঁচাতে পারে একটি জীবন।
