রাশিয়া এবং চীনের সঙ্গে পাল্লা দিতে যুক্তরাষ্ট্রকে অবিলম্বে পারমাণবিক অস্ত্রের পরীক্ষা পুনরায় শুরু করার নির্দেশ দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ১৯৯২ সালের পর এই প্রথমবার যুক্তরাষ্ট্র ফের পারমাণবিক অস্ত্র পরীক্ষার পথে হাঁটতে চলেছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, প্রেসিডেন্ট পুতিনের সীমাহীন পাল্লার পারমাণবিক ক্ষেপণাস্ত্র ও সুপার টর্পেডোর পরীক্ষার ঘোষণার পর ট্রাম্পের এই নির্দেশ বিশ্বকে এক অঘোষিত ‘পারমাণবিক যুদ্ধের’ দিকে নিয়ে যেতে পারে।
দক্ষিণ কোরিয়ায় চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে বৈঠকের ঠিক আগে, বুধবার রাতে (স্থানীয় সময়) নিজের সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মে ট্রাম্প এই নজিরবিহীন নির্দেশনা দেন।
ডোনাল্ড ট্রাম্প জানান, অন্যান্য দেশের পরীক্ষা কর্মসূচির কারণে তিনি যুদ্ধ বিভাগকে সমতার ভিত্তিতে যুক্তরাষ্ট্রের পারমাণবিক অস্ত্রের পরীক্ষা শুরু করার নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি দাবি করেন, এই প্রক্রিয়া অবিলম্বে শুরু হবে।
ট্রাম্প বলেন, প্রতিপক্ষরাই তাঁকে এই মহা ঝুঁকিপূর্ণ খেলার ময়দানে নামতে বাধ্য করছে এবং তাঁর হাতে অস্ত্রাগারকে হালনাগাদ ও সংস্কার করা ছাড়া আর কোনো বিকল্প ছিল না।
ট্রাম্পের মতে, বর্তমানে বিশ্বের যেকোনো দেশের চেয়ে যুক্তরাষ্ট্রের কাছে বেশি পারমাণবিক অস্ত্র রয়েছে। এরপর রাশিয়া এবং তৃতীয় স্থানে চীন রয়েছে। তবে তিনি হুঁশিয়ারি দেন যে, পাঁচ বছরের মধ্যে চীনের পারমাণবিক কর্মসূচি যুক্তরাষ্ট্রের সমপর্যায়ে পৌঁছে যাবে।
ট্রাম্পের এই নির্দেশের প্রেক্ষাপট তৈরি হয়েছে রাশিয়া ও উত্তর কোরিয়ার ক্রমাগত শক্তি প্রদর্শনের মাধ্যমে। কয়েক দিন আগেই রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ‘ডুমসডে’ সক্ষম, সীমাহীন পাল্লার পারমাণবিক ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষা চালানোর ঘোষণা দেন। গতকাল বুধবার তিনি পারমাণবিক অস্ত্র বহনে সক্ষম এক ‘সুপার টর্পেডো’ পরীক্ষারও ঘোষণা দেন, দাবি করা হয় কোনো প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাই একে আটকাতে পারবে না।
অন্যদিকে, কিম জং উন নিজেদের আনুষ্ঠানিকভাবে পারমাণবিক শক্তিশালী দেশ হিসেবে প্রমাণ করতে একের পর এক ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা চালিয়ে যাচ্ছেন।
যুক্তরাষ্ট্র শেষবার ১৯৯২ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর ভূগর্ভে পারমাণবিক অস্ত্রের পরীক্ষা চালিয়েছিল। সে সময় তৎকালীন প্রেসিডেন্ট জর্জ এইচ.ডব্লিউ. বুশ স্নায়ুযুদ্ধের সমাপ্তির পর একটি স্থগিতাদেশ জারি করেছিলেন।
তবে ট্রাম্প তাঁর পোস্টে পরীক্ষাগুলো কীভাবে পরিচালিত হবে সে বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য দেননি। বিশেষজ্ঞরা আশঙ্কা প্রকাশ করছেন, তাঁর এই আচমকা নির্দেশ বিশ্বজুড়ে অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ কাঠামোকে দুর্বল করে ভূ-রাজনৈতিক উত্তেজনা বহুলাংশে বৃদ্ধি করতে পারে।
