সরকারি চাকরিজীবীদের জন্য নতুন বেতন কাঠামো প্রণয়নের কাজ এগিয়ে নিচ্ছে পে কমিশন। বর্তমান ২০ গ্রেডের কাঠামো ভেঙে বেতন বৈষম্য কমানো এবং সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন বেতনের পার্থক্য হ্রাস করাই এই কমিশনের প্রধান লক্ষ্য।
কমিশনের সদস্যদের মতে, এই বিষয়ে সবাই একমত এবং সেই দিকেই অগ্রগতি হচ্ছে। কমিশনের একাধিক সদস্য জানিয়েছেন, এখন পর্যন্ত পাওয়া প্রস্তাবগুলোর বেশিরভাগেই গ্রেড সংখ্যা কমিয়ে ১০ থেকে ১২টির মধ্যে সীমাবদ্ধ করার দাবি উঠেছে।
এ বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা শেষে সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। তাদের ভাষায়, কমিশন গঠনের মূল উদ্দেশ্যই হলো বৈষম্য দূর করা, তাই গ্রেড পুনর্বিন্যাস নিশ্চিত। তবে চূড়ান্তভাবে কতটি গ্রেড থাকবে এবং বেতন অনুপাত কীভাবে নির্ধারিত হবে, তা জানতে কিছুটা সময় লাগবে।
বর্তমানে কমিশনের সদস্যরা বিভিন্ন সংগঠনের সঙ্গে মতবিনিময় করছেন। সংগঠনের সংখ্যা বেশি হওয়ায় সদস্যরা তিনটি দলে ভাগ হয়ে এসব বৈঠক পরিচালনা করছেন। কমিশন সূত্রে জানা গেছে,
অনলাইনে দুই হাজারের বেশি সংগঠন নতুন পে স্কেল বিষয়ে মতামত দিয়েছে। যাচাই শেষে ২৫০ থেকে ৩০০টি সংগঠনকে সরাসরি মতবিনিময়ের জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
সবকিছু পরিকল্পনা অনুযায়ী এগোলে আগামী ৩০ অক্টোবর পর্যন্ত এই মতবিনিময় চলবে। এরপর সংগৃহীত মতামত বিশ্লেষণ করে খসড়া সুপারিশ তৈরি করা হবে। সদস্যদের সম্মতির ভিত্তিতে তা চূড়ান্ত করে সরকারের কাছে জমা দেওয়া হবে।
কমিশনের সদস্য ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হিসাববিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মাকসুদুর রহমান সরকার বলেন, “অনলাইনে মতামত গ্রহণ শেষ হয়েছে ১৫ অক্টোবর। এখন সংগঠনগুলোর সঙ্গে মতবিনিময় চলছে, যা ৩০ অক্টোবর শেষ হবে। এরপর আমরা বসে চূড়ান্ত সুপারিশ প্রস্তুত করব।”
তিনি আরও জানান, কর্মচারীদের দাবি অনুযায়ী ১৫ ডিসেম্বরের মধ্যে সুপারিশ জমা দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে। তবে কমিশন গঠনের সময় থেকেই ছয় মাসের মধ্যে কাজ শেষ করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। “আমরা নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই নতুন পে স্কেল ঘোষণার লক্ষ্যে কাজ করছি,” বলেন অধ্যাপক মাকসুদুর।
উল্লেখ্য, পে কমিশন সাধারণ নাগরিক, সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী, স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান এবং বিভিন্ন সমিতি ও অ্যাসোসিয়েশনের কাছ থেকে উন্মুক্ত মতামত নিয়েছে। সেখানে ২০ গ্রেড কাঠামো বহাল রাখা বা পরিবর্তনের বিষয়ে আলাদা প্রশ্ন রাখা হয়। পাশাপাশি, অংশগ্রহণকারীদের কাছ থেকে পছন্দের গ্রেড সংখ্যা ও তার যৌক্তিক ব্যাখ্যাও চাওয়া হয়।
